সাত আয়াতের সূরা ফাতিহা’র মধ্যে কি রয়েছে?
*সূরা ফাতিহা*
সাত আয়াতের সূরা ফাতিহা’র মধ্যে কি রয়েছে? এর মর্ম ও অর্থ আমরা সবাই হয়ত বুঝিনা। আল্লাহর কাছে আমরা কি চাচ্ছি। আল্লাহর কাছে কি বলছি। সেগুলো মুখস্ত বলছি ঠিকই। কিন্তু তার মানে হয়ত কিছুই জানি না। আসুন, জেনে নেই।
ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ رَبِّ ٱلْعَالَمِينَ
আলহামদুলিল্লা-হি রাব্বিল আ-লামীন।
সূরা ফাতিহার শুরুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’। অর্থাৎ ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর’ বললেও আসলেই কি আমাদের সমস্ত কিছুর জন্য আল্লাহকে প্রশংসার সবটুকু দিচ্ছি। নাকি জাগতিক তোষামোদি ও চাটুকারিতায় মানুষকেও এই প্রশংসায় শরীক করছি!
‘রাব্বিল আ’লামীন’ অর্থাৎ ‘সমস্ত সৃষ্টি জগত সমূহের প্রভূ’। ‘রব’ শব্দটি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বেলায় প্রযোজ্য হতে পারে না। আর বিশ্ব জগত সমূহের উন্মেষ, স্থিতি ও স্থায়িত্ব শুধুমাত্র একক রবের মূখাপেক্ষী।
ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
আর রাহমা-নির রাহীম।
অর্থাৎ ‘পরম দাতা ও দয়ালু’।
مَالِكِ يَوْمِ ٱلدِّينِ
মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।
অর্থাৎ ‘বিচার দিবসের মালিক’। ঐ দিবসকে প্রতিফল দিবস বলে। যে দিবসে পুরুস্কার ও তিরস্কার কার্যকর হবে।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাসতা’ঈন।
‘ইয়্যাকা না’বুদু’ অর্থাৎ ‘আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি’। ‘ওয়া ইয়্যা-কানাসতা’ঈন’ অর্থাৎ ‘আমরা শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি’।আমরা প্রতি নামাজে একথা ঠিকই বলছি। কিন্তু নিজেকে একটু পরখ করি তো। আমরা কি সত্যিই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কোন সাহায্য চাই না। জেনে না জেনে, ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক করছি কিনা।
ٱهْدِنَا ٱلصِّرَاطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ
ইহদিনাসসিরা-তাল মুছতাকীম।
অর্থাৎ ‘আমাদেরকে সরল পথ দেখাও’। সরল পথ মানে সোজা রাস্তা, যাতে কোন আঁকা-বাকা নেই। যার প্রকৃত অর্থ হচ্ছে ‘ইসলাম’।
صِرَاطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
সিরা-তাল্লাযীনা আন’আম তা’আলাইহিম।
অর্থাৎ ‘তাঁদের পথে যারা আপনার নে’আমত বা অনুগ্রহ লাভ করেছে’। আল্লাহর করুণা সিক্ত বা অনুগ্রহ প্রাপ্ত প্রিয় ভাজন কারা আল্লাহ পাক নিজেই সূরা নিসা’র ৬৯নং আয়াতে জানিয়ে দিয়েছেন- “নে’আমত প্রাপ্তরা হলেন নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ ও সালেহীনগণ।”
غَيۡرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا اَ۬لضَّآلِّينَ ص
গাইরিল মাগদূ বি’আলাইহীম ওয়ালাদ দ্বাল্লিন।
অর্থাৎ ‘যারা আপনার অভিসম্পাত গ্রস্ত বা গজব গ্রস্ত তাঁদের পথে নয়, তাদের পথেও নয় যারা পথভ্রষ্ঠ হয়েছে’। রাসূল (সাঃ) বলেন, যাদের প্রতি গজব অবতীর্ণ হয়েছে তারা ‘ইহুদী’, আর যারা পথভ্রষ্ঠ তারা ‘খৃষ্টান’।
আসুন এবার আমরা নিজেকে প্রশ্ন করি। আমরা কি সত্যিই কোনভাবেই ইহুদী খৃষ্টানের মত চলতে চাই না। আমরা কি সত্যিই মনেপ্রানে চাই- নবীদের মত, আল্লাহর বিশ্বাসী বান্দাদের মত, কিংবা শহীদদের মত করে চলতে।